🗳️ সিপিবির সংবিধান বিষয়ে অবস্থান: চার মূলনীতির পক্ষে, পিআর ব্যবস্থার প্রস্তাব
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান পুনর্লিখনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। তারা মনে করে, সংবিধানের চারটি মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—হঠাৎ পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেশের জন্য বিভ্রান্তিকর ও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
আজ মঙ্গলবার (২০২৫ সালের মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক দীর্ঘ বৈঠকে অংশগ্রহণ করে সিপিবির একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, সংবিধানের চার মূলনীতিকে বাদ দেওয়া সিপিবির জন্য গ্রহণযোগ্য নয় এবং তারা সংবিধান পুনর্লিখনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
🔍 সিপিবির প্রস্তাবিত মূল পয়েন্টসমূহ:
-
সংবিধান পুনর্লিখনের বিরোধিতা – সিপিবির মতে, ১৯৭২ সালের সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ফিরতে হবে, তবে তা সংস্কারের মাধ্যমে, পুনর্লিখনের মাধ্যমে নয়।
-
সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (Proportional Representation) – সংসদ নির্বাচনে পিআর ব্যবস্থা চালুর পক্ষে প্রস্তাব রেখেছে সিপিবি।
-
জাতিসত্তার স্বীকৃতি – ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের দাবি।
-
জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের নিশ্চয়তা – খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে সংবিধানে যুক্ত করার প্রস্তাব।
-
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা ও নারীর অংশগ্রহণ – কেউ যেন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন এবং সংসদে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো হয়—এই বিষয়গুলোতে সিপিবি ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
🧑🤝🧑 বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কারা?
সিপিবির ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন:
-
সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ
-
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক এ এন রাশেদা, কাজী সাজ্জাদ জহির (চন্দন)
-
অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, কাজী রুহুল আমিন, রাগিব আহসান মুন্না, সাজেদুল হক রুবেল, আবিদ হোসেন ও অধ্যাপক ফজলুর রহমান
অন্যদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন:
-
সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ,
-
সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ইফতেখারুজ্জামান
-
বৈঠক পরিচালনা করেন মনির হায়দার (প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী)
📌 উপসংহার:
সিপিবির মতে, এখনই সংবিধান পুনর্লিখনের সময় নয়। বরং, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন, তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা উচিত।
তারা মনে করেন, এখন অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি না করে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক কাঠামো শক্তিশালী করাই হবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি।
0 Comments